এক নজরে রাজিবপুর উপজেলা

সোনাভরী নদী
ছবি:
সোহান সরকার

 

চর রাজিবপুর উপজেলা
ডাকনাম: রাজিবপুর

চর রাজিবপুর উপজেলা বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার একটি উপজেলা। এই উপজেলাটির উত্তরে রৌমারী উপজেলা ও চিলমারী উপজেলা এবং ব্রহ্মপুত্র নদ, দক্ষিণে জামালপুর এর দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা ও গাইবান্ধার গাইবান্ধা সদর উপজেলা এবং ব্রহ্মপুত্র নদ, পূর্বে ভারতের আসাম এবং মেঘালয় রাজ্য, পশ্চিমে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা। এর আয়তন ১১১.০৩২ বর্গ কিলোমিটার।

বাংলাদেশে চর রাজিবপুর উপজেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৫°২৩′৫৩″ উত্তর ৮৯°৪১′২০″ পূর্বস্থানাঙ্ক: ২৫°২৩′৫৩″ উত্তর ৮৯°৪১′২০″
সময় অঞ্চল বিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড ৫৬৫০
বিভাগের কোড ৫৫ ৪৯ ০৮

মানচিত্র
ছবি:
উইকিপিডিয়া

প্রশাসন
রাজিবপুর থানা গঠিত হয় ১৯৭৭ সালে। বর্তমানে এটি উপজেলা। ইউনিয়ন ৩, গ্রাম ১০২। ১টি মৌজা নিয়ে গঠিত। আয়তন ৯.১৩ বর্গ কিমি।

প্রশাসনিক এলাকা
উপজেলা: ১টি
ইউনিয়ন পরিষদ: ৩টি ( রাজিবপুর, কোদালকাটি এবং মোহনগঞ্জ)
গ্রাম: ১০২টি
সংসদীয় আসন-২৮, কুড়িগ্রাম ৪ (রৌমারী, রাজিবপুর এবং চিলমারী)

ঐতিহাসিক ঘটনাবলি
১৯৭১ সালে কোদালকাটিতে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচন্ড যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে অনেক পাকসেনা নিহত এবং ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। বীর প্রতীক তারামন বিবির জন্মস্থান শঙ্কর মাধবপুর গ্রামে একদিনে প্রায় ৪০ জন পাকবাহিনীকে হত্যা করা হয়। এছাড়া ১৯৬০ সালে ঘুর্ণিঝড়ে রাজিবপুরের জামালপুর সীমান্তে ২১ জন লোক নিহত হয়।

জনসংখ্যা
মোট ৬৪০২৮; পুরুষ ৪৮.৫৯%, মহিলা ৫১.৪১%; মুসলমান ৯৭.৫১%, হিন্দু ১.৪৯%; ও অন্যান্য ১.০% জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিমি ৫২৩ জন। ভোটার সংখ্যা মোট ৪২৫৪৮; পুরূষ ২১০৮৬, মহিলা ২১৪৬২। জনগোষ্ঠীর প্রধান পেশা সমূহ : কৃষি ৫০.৫৭%, ব্যবসা ৩.৯৩%, চাকরি ২.৬২%, কৃষি শ্রমিক ৩০.২৭%, অকৃষি শ্রমিক ১.৫৫%, অন্যান্য ১১.০৬%।

শিক্ষা
গড় হার ২৬.৪৭%; কলেজ ৪, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৯, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২১, বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩৩, মাদ্রাসা ৬।

নারীশিক্ষা
রাজিবপুরে নারীশিক্ষার সূচনা করেন শংকরমাধবপুর গ্রামের আমিনা বেগম। তিনি চরনেওয়াজী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে প্রথম মেট্রিক পাশ করেন।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে: রাজিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাজিবপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চরনেওয়াজী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, রাজিবপুর সরকারি কলেজ,শংকর মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয়, কোদালকাটি সাদাকাত হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়, মোহনগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

অর্থনীতি
মোট আবাদী জমি: ১৫৪৫০ একর
অর্থকরী ফসল: ধান, পাট, সরিষা,বাদাম, কাউন প্রভৃতি
শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা: মোট ৭টি, কুটির শিল্প- ৭টি
পাকা রাস্তা: ১৪ কি. মি.
কাচা রাস্তা: ১৫০ কি. মি.
হাটবাজার: ৫ টি । উল্লেখযোগ্য হাট: রাজিবপুর হাট ও বর্ডার হাট এবং নয়ারচর বাজার
প্রধান রপ্তানি দ্রব্য ধান, পাট, গুড়, বাদাম
শিল্প ও কলকারখানা ওয়েল্ডিং ৫, চাল ও আটা মিল
কুটিরশিল্প কুমার ২২, বাঁশ ও বেত শিল্প ৩০, স্বর্ণকার ১০, কাঠের কাজ ১২, সেলাই কাজ ২০

ভূমি ব্যবহার
চাষযোগ্য জমি ১৫৪৫০ একর। এক ফসলি ২০%, দো ফসলি ৫২%, তিন ফসলি ২৮%; সেচের আওতায় আবাদি জমি ৩০%। ভূমিহীন ১১%, প্রান্তিক চাষি ৪৪.৫%, মধ্যম চাষি ২০%, বড় চাষি ১২%; মাথাপিছু আবাদি জমি ০.০৭ হেক্টর।

প্রধান কৃষি ফসল
ধান, গম, পাট, আলু, আখ, কাউন, শাকসবজি, চিনাবাদাম, রসুন, সরিষা, মসুর।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় কৃষি ফসল
চিনা, আউশ ধান, অড়হর।

প্রধান ফল-ফলাদি
আম, কাঁঠাল, কুল, সুপারি, জাম, কলা, তরমুজ।

প্রধান নদী
ব্রহ্মপুত্র, হলহলিয়া, জিঞ্জিরাম।

দর্শনীয় স্থান
বেহুলার চর এবং এই উপজেলার প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ নদী। আর এই নদীগুলোর কোল ঘেষা গ্রামগুলো দেখতে অনেক সুন্দর। আরো রয়েছে ছোট বড় অনেক চর যা দেখলে মনে হয় এক একটা দ্বীপ। আর এই চরগুলোর সৌন্দর্য কাশফুল আরও বহুগুন বাড়িয়ে দেয়। এই নদীগুলো পাহাড়া দেওয়ার জন্য রয়েছে একটা জলথানা, যা বাংলাদেশের দুইটি জলথানার একটি। এছাড়া রয়েছে পাহাড়িয়া নদী। যে নদী মাঝে মাঝে ভারত বাংলাদেশের মধ্যে ভাগ হয়ে গেছে। বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সচল বর্ডার হাট রাজিবপুরে অবস্থিত। যা উপজেলাটির বালিয়ামারী এবং ভারতের মেঘালয় রাজ্যের কালাইচর সীমান্তে অবস্থিত। প্রতিদিন নিয়মিতভাবে এখানে দর্শক সমাগম ঘটে থাকে।

বর্ডার হাট
ছবি:
সোহান সরকার

যোগাযোগ ব্যবস্থা
পাকা রাস্তা ২০ কিমি, কাঁচা রাস্তা ১৫০ কিমি; নৌপথ ১৪ নটিক্যাল মাইল। পালতোলা নৌকা, পাল্কি, গরু, মহিষ ও ঘোড়ার গাড়ির পাশাপাশি সব ধরনের আধুনিক যানবাহন এখানে চলাচল করে।

 

তথ্যসূত্র:   
উইকিপিডিয়া

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *